শুকনো কথায় খিদে পায়। তাই এবার একটু খাওয়াদাওয়ার আলোচনা হয়ে যাক। সেই সময়কার ময়দানি খাওয়াদাওয়ার কথা।
এক কালের ইস্টবেঙ্গল মাঠের ক্যান্টিনের বিখ্যাত স্বাদওলা সেই মাংসের ঘুগনি আর ডিমের পোচ এখন আর হাজার চেষ্টাতেও পাবেন না কেউ। সেই বাঁশ আর টিনের তৈরি ক্যান্টিন আজ আর নেই। বদলে দাঁড়িয়ে আছে ঝাঁচকচকে কাফেটেরিয়া। মিইয়ে আসা বাতির আলোয় ঝুলপড়া ক্যান্টিনের বদলে ফটফটে আলো। সুদৃশ্য টেবিল। পাশে মহমেডান মাঠেও সেই ‘হারিয়ে যাওয়ার’ই গল্প। বড়-বড় পেঁয়াজি, টোস্ট, রং-চটা কাপে চা। আজ কোথায় যেন সেসব দিন উবে গেছে । মোহনবাগানের ক্যান্টিনের চিকেন স্টু এক সময় ছিল হট-আইটেম। হাইকোর্টের বিচারপতি থেকে অভিনেতা, ব্যাঙ্কার, উত্তর কলকাতার রকের ছা-পোষা কেরানি, বনেদি বাড়ির কর্তা, বিখ্যাত ডাক্তার, সবার কাছেই তখন মোহনবাগানের খেলা দেখতে গিয়ে এক বাটি স্টু না খেলে বুঝি জীবনটাই অপচয়। এখন যা নিভু-নিভু হয়ে টিকে আছে, প্রাগৈতিহাসিক কোনো বস্তুর মতোই। পুরনো লোকজনের মতে, সে স্বাদ আজ উধাও, যার লোভে এক কালে উপচে পড়ত ভিড়, আজকের কাজুর ক্যান্টিনে! স্টু’টা পাওয়া যায় এখনও। মাঠে শাকালুওয়ালা, স্যাকারিন দেওয়া লেবু চা বা চিনেবাদামওয়ালার দেখা মেলে এখনো, তবে কালেভদ্রে। নিয়মিত দেখতে পাওয়া যায় না গ্যালারিতে কাচের বয়ামে করে আনা কোনো দাদুর আচার, বা লাল-সবুজ-হলুদ লজেন্স বিক্রি করা দাদাদিদিদেরও। ক্রমশ লুপ্তপ্রায় প্রজাতির মতোই দিনে দিনে তাঁরাও হারিয়ে যাচ্ছেন রোজই।
আরও পড়ুন: কী মোহময় নাম সে সব কাগজের! ‘গড়ের মাঠ’, ‘খেলার মাঠ’, ‘অলিম্পিক’, ‘ময়দান’, ‘গ্যালারী’, ‘বারপোস্ট’, ‘ব়্যাম্পার্ট’!কিছু তো ছিলই সাত আর আটের দশকের কলকাতা ফুটবলে। কেউ মানলেও। না মানলেও।
খুব ভালো লাগলো